പ്രധാനമന്ത്രിയെക്കുറിച്ചും ദേശീയഗാനത്തെക്കുറിച്ചും അറിയില്ല; ട്രെയിനില്‍ തൊഴിലാളിക്ക് മര്‍ദ്ദനമേറ്റു; വീഡിയോ

ദേശീയഗാനത്തെക്കുറിച്ചും പ്രധാനമന്ത്രിയെക്കുറിച്ചുമുള്ള ചോദ്യങ്ങള്ക്ക് ഉത്തരമറിയാത്ത തൊഴിലാളിക്ക് ട്രെയിനിനുള്ളില് ക്രൂര മര്ദ്ദനമേറ്റു. ഹൗറ-മാള്ഡ പാസഞ്ചര് ട്രെയിനിലാണ് സംഭവമുണ്ടായത്. ഗുജറാത്ത് സ്വദേശിയായ ജമാല് മോമിന് എന്ന തൊഴിലാളിക്കാണ് മര്ദ്ദനമേറ്റത്. നാലുപേര് ചേര്ന്നാണ് ഇയാളെ ആക്രമിച്ചത്.
 | 

പ്രധാനമന്ത്രിയെക്കുറിച്ചും ദേശീയഗാനത്തെക്കുറിച്ചും അറിയില്ല; ട്രെയിനില്‍ തൊഴിലാളിക്ക് മര്‍ദ്ദനമേറ്റു; വീഡിയോ

കൊല്‍ക്കത്ത: ദേശീയഗാനത്തെക്കുറിച്ചും പ്രധാനമന്ത്രിയെക്കുറിച്ചുമുള്ള ചോദ്യങ്ങള്‍ക്ക് ഉത്തരമറിയാത്ത തൊഴിലാളിക്ക് ട്രെയിനിനുള്ളില്‍ ക്രൂര മര്‍ദ്ദനമേറ്റു. ഹൗറ-മാള്‍ഡ പാസഞ്ചര്‍ ട്രെയിനിലാണ് സംഭവമുണ്ടായത്. ഗുജറാത്ത് സ്വദേശിയായ ജമാല്‍ മോമിന്‍ എന്ന തൊഴിലാളിക്കാണ് മര്‍ദ്ദനമേറ്റത്. നാലുപേര്‍ ചേര്‍ന്നാണ് ഇയാളെ ആക്രമിച്ചത്.

മാള്‍ഡയിലെ കാലിയാചക്ക് എന്ന സ്ഥലത്തു നിന്ന് ട്രെയിനില്‍ കയറിയ ജമാലിനോട് അടുത്ത് വന്നിരുന്ന അക്രമികള്‍ ചോദ്യങ്ങള്‍ ഉന്നയിക്കുകയായിരുന്നു. പ്രധാനമന്ത്രിയെക്കുറിച്ചും ബംഗാള്‍ മുഖ്യമന്ത്രിയെക്കുറി്ച്ചും ദേശീയഗാനത്തെക്കുറിച്ചുമായിരുന്നു ചോദ്യങ്ങള്‍. ഇവയ്ക്ക് ഉത്തരം പറയാന്‍ കഴിയാതെ വന്നതോടെ മര്‍ദ്ദനം ആരംഭിക്കുകയായിരുന്നു.

സീറ്റ് മാറിയിരിക്കാനായിരുന്നു ആദ്യ ആവശ്യം. അതിന് താന്‍ സമ്മതിച്ചെങ്കിലും പോകാന്‍ അനുവദിക്കാതെ ചോദ്യങ്ങള്‍ ചോദിച്ചു. തന്റെ മതത്തെയും കുടുംബത്തെയും അധിക്ഷേപിക്കുകയും മര്‍ദ്ദിക്കുകയും ചെയ്തുവെന്ന് ജമാല്‍ പറഞ്ഞു. മറ്റു യാത്രക്കാര്‍ ആരും ഇതിനെതിരെ രംഗത്തെത്തിയില്ലെന്നും ജമാല്‍ വ്യക്കമാക്കി.

ഇയാളെ നിര്‍ബന്ധിച്ച് ‘ഭാരത് മാതാ കി ജയ്’ എന്ന് പറയിപ്പിക്കുകയും ബാന്‍ഡല്‍ സ്റ്റേഷനില്‍ ഇറക്കിവിടുകയും ചെയ്തു. അക്രമികളില്‍ ചിലര്‍ പകര്‍ത്തിയ ദൃശ്യങ്ങള്‍ പിന്നീട് സോഷ്യല്‍ മീഡിയയില്‍ പ്രത്യക്ഷപ്പെട്ടിരുന്നു. മെയ് 14നാണ് സംഭവമുണ്ടായത്.

বিগত কয়েকদিন থেকে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যায় একটি যুবককে কয়েকজন ট্রেনের মধ্যে ঘিরে ধরে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে এবং তার উত্তর দিতে না পারলে তাকে চড় মেরে তার ধর্মীয় পরিচয় ও সংস্কৃতি নিয়ে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়।দুর্ভাগ্য হলেও সত্য,ঐ হেনস্থাকারী যুবকেরাও বাঙালী!মালদার কালিয়াচক নিবাসী ঐ যুবক রাজ্যের বাইরে কাজ করেন।ঘটনার দিন সে কলকাতা থেকে মালদায় নিজের বাড়ি ফিরছিল।তাকে ঘিরে ধরা ঐ যুবকেরা প্রথমে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নাম জিজ্ঞেস করে।সে উত্তরে মমতা ব্যানার্জীর নাম বললে তাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম জিজ্ঞেস করা হয়।যুবকটি আবার মমতা ব্যানার্জীর নাম করে।তাহলে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কে?পাশ থেকে একজন বলে-নওয়াজ শরিফ!!??পরের প্রশ্ন-দেশের রাষ্ট্রপতি কে?দেশের জাতীয় সঙ্গীত বল।সে না পারলে তাকে চড় থাপ্পড় মারা হয়।তখন প্রশ্নকর্তা বলে যে তুই জনগনমন বলতে পারিস?ছেলেটি বলে সে জানে ও গেয়ে দেখায়।সে বলে ঐটাই যে জাতীয় সঙ্গীত তা সে জানেনা এবং বারেবারে বলে যে সে পড়াশোনা জানেনা।এরপর বন্দেমাতরম,ভারত মাতাকি জয় বলতে বলা হয়।সে বারেবারে নিরক্ষরতার কথা বললেও ঘুরে ফিরে তাকে প্রশ্নগুলি করা হয় এবং না পারলে চড় মারা হয় ও তার ধর্মীয় আচার-আচরন নিয়ে হেনস্থা করা হয়।ভিডিওটি কয়েকদিন আগে "বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ"-এর হাতে আসে। আমরা এর সত্যতা অনুসন্ধান করতে আমাদের মালদা শাখার সহকর্মীদের অনুরোধ করি।ঐ যুবকের নাম জামাল মোমিন।বাড়ি-নয়াগ্রাম মহেশপুর,কালিয়াচক,মালদা।আমাদের প্রতিনিধি তার বাড়িতে যায়।তার স্ত্রী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং তার স্বামীর হেনস্থার প্রতিবাদ জানান।আমরা জামালের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি কারন একদিন আগেই সে কর্মস্থলে চলে গেছে।আমরা তার স্ত্রীকে যথাযোগ্য আইনগত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি ও আমাদের আইনগত সহযোগী দলের সাথে পরামর্শ করছি।"বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ"-এর প্রতিষ্ঠা বাংলার সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার।আমরা প্রায়শই অন্যান্য রাজ্যে প্রত্যক্ষ করি এই ধরণের ঘটনা যেখানে শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার জন্য,খাদ্যাভ্যাসের জন্য নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে,পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।তখন আমরা গর্ব করে বলি,আমাদের বাংলায় এসব হয়না।কিন্তু এই ঘটনা সেই গর্বে তীব্র কুঠারাঘাত আনলো না কি?এ কোন দিকে যাচ্ছে আমার বাংলা,আমার দেশ!!প্রশ্নটা সকল বাঙালীকে করতে হবে।আমাদের দেশের ৭২% স্বাক্ষর,পঃবঙ্গে ৭৬%…অর্থাৎ পঃ বঙ্গে ১০০ জনে ৭৬জন পড়তে পারে(!),বাকি ২৪জন সম্পূর্ণ নিরক্ষর।জামাল ঐ ২৪-এর দলে।পড়াশোনা ছেড়ে দীর্ঘদিন বাইরে।এই শতকরা ২৪ জনকে কিংবা ভারতের ২৮,UP-এর ৩৩,Bihar-এর ৩৮জনকে চড় কি,মেরে ফেললেও জাতীয় সঙ্গীত,প্রধানমন্ত্রী,রাষ্ট্রপতির নাম বেরবে বলে মনে হয়না।প্রশ্নকর্তা,তার পার্শ্ববর্তী সবাই বাঙালী,শিক্ষিত!!যাকে মারা হল সেও এক নিরীহ নিরক্ষর বাঙালী।তার একটাই অপরাধ,সে সংখ্যালঘু!তাই তাকে নানাভাবে হেনস্থা,গালিগালাজ ও তাকে ঘিরে উল্লাস।কিন্তু এই উল্লাসের কাছে আজ মানবিকতার হত্যা হল।এই ঘৃণ্য মানসিকতার বিরুদ্ধে আপামর বাঙালীকে এগিয়ে এসে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করতে হবে,বিশেষত সংখ্যাগুরুদের।বাড়ির বড়ভাইকে এগিয়ে আসতে হবে ছোটর পাশে,দুয়ে মিলে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে এই ভিনরাজ্যের নোংরা মানসিকতাকে বাংলা থেকে বহুদূরে…কারন আমরা বাঙালী,এটা পশ্চিমবঙ্গ…রবীন্দ্র-নজরুলের এই বাংলায় তোমার(সাম্প্রদায়িকতা) ঠাঁই নাই-সজোরে বলতে হবে সকলকে…আহ্বান "বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের"। Bangla Sanskriti Mancha

Posted by Samirul Islam on Wednesday, May 23, 2018